হাশিম আমলা🚀
২০১২ সালের ১৯শে জুলাই ইংল্যান্ডের ওভালে সাউথ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ড এর ফাস্ট টেস্ট শুরু হলো।
মুসলমান উম্মাহর জন্য তখন রমজান মাস।
ইংল্যান্ড ফাস্টে ব্যাটিং করে অলআউট হয়ে গেলো ৩৮৫ রানে। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে সাউথ আফ্রিকা হাশিম আমলার ৩১১ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসের উপর ভর করে স্কোর করলো ৬৩৭।
এর আগে সাউথ আফ্রিকার হয়ে কারো ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিলো না। আমলা এই তিনশো রান করতে বল খেলেছেন ৫২৯ টি।মোট ৮৮ ওভারের উপর আমলা একাই ব্যাটিং করেছেন এই ইনিংস খেলবার জন্য।
আমলার ব্যাটে যখন ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে, উনি তখন রোজা অবস্থায় ছিলেন। বিলিভ ইট অর নট, ৮৮ টি ওভার আমলা টানা মাঠে ছিলেন রোজা অবস্থায়।
আরেকটি ঘটনা বলি;
২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কা-দঃ আফ্রিকার ম্যাচ চলছে, ব্যাটিং করছিলেন কুমারা সাংগাকারা, ডেইল স্টেইনের শর্ট পিচ বল খেলতে গিয়ে, বলে ব্যাটে ঠিক মত লাগাতে পারলেন না। বল ক্যাচ উঠে যায়, আর সেই বল সরাসরি চলে যায় পয়েন্টে ফিল্ডিং করা হাশিম আমলার কাছে।
টিভি কমেন্ট্রি করছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ডিন জোন্স। আমলাকে ক্যাচ ধরতে দেখে, ডিন জোন্স হঠাৎ করেই কমেন্ট্রি তে বলে বসলেন...
''এ্যান্ড দ্যা টেরোরিস্ট হ্যাজ গট অ্যানাদার উইকেট!''
যার বাংলা করলে হয়,
-সন্ত্রাসীটি আরেকটি ক্যাচ ধরলো।
খেলা শেষে আমলা, এই কথা শুনতে পেয়ে কষ্ট পেয়েছিলেন। পরে ধারাভাষ্যকার জোন্স আমলার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এর জবাবে আমলা বলেছিলেন...
-"তার উপর আমার আর কোন ক্ষোভ নেই।আমি মুসলিম,আর একজন মুসলিমের দায়িত্ব হল,কেউ ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে দেয়া !"
হাশিম মোহাম্মদ আমলা। আমার চাইতে বয়সে এক বছরের বড় এই মানুষটির ব্যাটিং,ব্যক্তিত্ব সব কিছুই আমার ভালো লাগতো।
হাশিম মোহাম্মদ আমলা।
সাউথ আফ্রিকা দলে,ড্রেসিং রুমে আমলার এই ব্যক্তিত্বের প্রভাব কতখানি ছিলো তা বারবার বলেছে, জ্যাক ক্যালিস, স্মিথ, ডি ভিলিয়ার্সরা।
তবে ডেইল স্টেইনের একটি মন্তব্য রিয়েল মোটিভেশান হতে পারে অনেকের জন্য।
" আমার যখন অনুপ্রেরণার প্রয়োজন হয় তখন আমি আমার বাম পাশে ঘুরে তাকাই,আর দেখি হাশিম কুরআন পড়ছে"
ক্রিকেট যদি হয় ভদ্রলোকের খেলা। তবে হাশিম আমলা হচ্ছে এই খেলার ব্রান্ড এম্বাসেডর।
1 comment